জামালপুরের দর্শনীয় স্থান সমূহ।Places Of Interest In Jamalpur

0

মালঞ্চ মসজিদ

জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার মালঞ্চ শিশু ও চক্ষু হাসপাতালের কমপ্লেক্সে কারুকার্য মণ্ডিত দৃষ্টিনন্দন মালঞ্চ মসজিদ (Maloncho Jame Mosque) অবস্থিত। সাবেক সচিব ও ইউনাইটেড ট্রাস্টের সহযোগিতায় মাজার, মসজিদ, কামিল মাদ্রাসা, মহিলা মাদ্রাসা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও ইসলামিক মিশনের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে দৃষ্টিনন্দন এই মালঞ্চ কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়েছে। সবুজ গাছ-গাছালীতে ঘেরা এক গম্বুজ বিশিষ্ট মালঞ্চ মসজিদের সামনে একটি স্বচ্ছ পানির দীঘি রয়েছে। নান্দ্যনিক সৌন্দর্যের জন্য বর্তমানে মালঞ্চ কমপ্লেক্সটি জামালপুর জেলার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।




শাহ জামালের মাজার

জামালপুর জেলা সদরের ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে চাপাতলি ঘাটের কাছে অত্র অঞ্চলের বিখ্যাত সাধক পুরুষ পীর শাহ জামালের মাজার শরীফ (Shah Jamaler Mazar) অবস্থিত। ১৫৮৬ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে হযরত শাহ জামাল (রহঃ) ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্য ইয়েমেন থেকে এই অঞ্চলে আগমণ করেন। সুফি দরবেশ পীরে কামেল হযরত শাহ জামাল (রহঃ) এর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা মুঘল দরবার পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। তখন বাদশা আকবর হযরত শাহ জামাল (রহঃ) এর খানকা শরীফের সমস্ত ব্যয় বহন করার আগ্রহ পোষণ করেন। সেই সাথে হযরত শাহ জামাল (রহঃ) এর কাছে কয়েকটি পরগনা দানের সনদ পাঠান। কিন্তু হযরত শাহ জামাল (রহঃ) এই লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাণ করেন। হযরত শাহ জামাল (রহঃ)-এর কারণে এ অঞ্চল জামালপুর নামে পরিচিতি লাভ করে।বর্তমানে হযরত শাহ জামালের মাজার শরীফের নির্মাণে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। আর সমাধিস্থলের পাশে একটি পুরাতন ঐতিহ্যবাহী মসজিদ রয়েছে। প্রতি বছর ধারাবাহকভাবে এখানে ওরস মাহফিল অনুষ্টিত হয়। এছাড়া প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত মাজার শরীফ জিয়ারত এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এখানে মানত করতে আসে।




লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্ক

জামালপুর জেলা সদরের বেলটিয়ায় নিরিবিলি পরিবেশে লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্ক (Luis Village Resort and Park) গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই পার্কটি ইতিমধ্যেই ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে সর্বাধুনিক বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্কে ওয়ান্ডার হুইল, বাম্পার কার, সুইং চেয়ার, মেরী গো রাউন্ড, মিনি ট্রেন, কফি কাপ এবং বোট রাইডিংসহ সর্বমোট ১৪ টি দেশি বিদেশি রাইড রয়েছে।লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্কে আরো আছে শিশুদের খেলনা ও হস্তশিল্প পণ্যের দোকান, ফাস্টফুড কর্ণার, পরিচ্ছন্ন রেস্টুরেন্ট এবং রাত্রিযাপনের জন্য রিসোর্টের সুবিধা। এছাড়া যেকোন ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এখানে একটি কনভেনশন সেন্টার রয়েছে।

লাউচাপড়া পিকনিক স্পট

লাউচাপড়া অবসর বিনোদন কেন্দ্র বা লাউচাপড়া পিকনিক স্পট (Lauchapra Picnic Spot) বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ঘেষা জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের পশরা সাজিয়ে থাকা লাউচাপড়ার পাহাড়, অরণ্য, লেক এবং আদিবাসীদের স্বতন্ত্র জীবনধারা দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য জামালপুর জেলা পরিষদ ১৯৯৬ সালে গারো পাহাড়ে ২৬ একর জায়গা জুড়ে ‘নিকা’ পিকনিক স্পট নির্মাণ করে। পিকনিট স্পটের প্রায় ১৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর আরও ৬০ ফুট উঁচু একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। এই ওয়াচ টাওয়ারের উপর থেকে সারি সারি সবুজ পাহাড়, মেঘের লুকোচুরি খেলা এবং অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। আর লাউচাপড়া পিকনিক স্পটে শিশুদের জন্য রয়েছে দোলনা, স্লিপার সহ বেশকিছু রাইড এবং গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। পার্কে প্রবেশ করতে দশ টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।




দয়াময়ী মন্দির

দয়াময়ী মন্দির (Doyamoyee Temple) জামালপুর জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। ১৬৯৮ খ্রিস্টাব্দে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর আমলে শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ৬৫ শতাংশ জমির উপর নির্মিত দয়াময়ী মন্দিরে আলাদাভাবে শিব, কালি, নাটমন্দির এবং মনসা দেবীর মন্দির স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া দয়াময়ী মন্দিরে শতবর্ষ পুরনো কারুকার্য খচিত বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম রয়েছে।প্রায় ৩২১ বছরের পুরনো দয়াময়ী মন্দিরে প্রতিদিনই বিভিন্ন পূজা অর্চণা আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং প্রতি বছর অষ্টমী মেলায় আগত হিন্দুধর্মালম্বীরা বিভিন্ন দেবতার উদ্দেশ্যে মান্নত করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য ঐতিহাসিক মন্দিরটি প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here