পর্বত বাগান
১৯৩০ সালে রাসবিহারী পর্বত দেশ-বিদেশি প্রায় ৫০০ জাতের ফল ও ফুলের চারা সংগ্রহ করে প্রায় ২০একর জমির ওপর গড়ে তোলেন একটি বাগান । সেই থেকে তার নামানুসারে এ বাগানটি পর্বত বাগান নামে পরিচিত পায়।বাগানের পাশ দিয়ে বযে যাওয়া খরস্রোত কুমারনদ বাগানের আকর্ষনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে বাড়তি সৌন্দর্য এনে দেয় ।আম ,জাম ,কাঁঠাল,কামরাংগা, আমড়া,কুল,সফেদা , জলপাই, আমলকী, কমলা জামরুল,তেজপাতা,দারুচিনি, লবঙ্গ,এলাচ সহ দেশ বিদেমি বিভিন্ন ফল ও ভেষজ গাছ । বাগাটি নয়নাভিরাম করার জন্য গোলাপ,গন্ধরাজ টগর, কামিনী, হাসনাহেনা বকুল, জুই বেলি ,জবা সহ দেশ বিদেশী সংখ্য ফুলের গাছ ।প্রায় ১২ রকমের গোলাপ গাছ ছিল পবর্ত বাগানে ।বাগানের মধ্যে ৬টি শান বাধানো পুকুরও রাজবিহারি পবর্তেও বাসভবনটি সবচেয়ে আকর্ষনিয় ।আগের মতো বাগানটির শোভা না থাকালেও কাছাকাছি জমিদার সুরেশ চন্দ্র পোদ্দারের বাড়ি মিলিয়ে এলাকাটি আর্কষনীয় । এ বাগানে অনেক দুর্লভ প্রজাতির গাছ আছে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি
___________________________________________
মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে দুই বাংলার প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈত্রিক বাড়ি অবস্থিত। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে আবির্ভূত এই বাঙ্গালী সাহিত্যিক একাধারে কবি, ছোট গল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। লেখকের প্রতি জন্মবার্ষিকীতে তার পৈত্রিকবাড়িতে দুই বাংলার উদ্যোগে বই মেলার পাশাপাশি পাহাড়ি নৃত্য, লালন ও পল্লীগীতির মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে সুনীল মেলায় আয়োজন করা হয়।
রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি
মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়ায় রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক খালিয়া জমিদার বাড়ির অবস্থান।প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই বাড়িটি উজানির জমিদার থেকে পাওয়া একটি জমিদার বাড়ি।প্রায় ২৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ির প্রাঙ্গনে একটি তিন তালা দালান, বাগানবাড়ি, পূজা মণ্ডপ এবং শান বাঁধানো পুকুর ঘাট রয়েছে। বর্তমানে রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ির মন্দির প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এ ছাড়াও এ অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ খালিয়া রাজারাম ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১১৭ বছর আগে।
সেনাপতির দিঘী
মাদারীপুর জেলার আমড়াতলা ও খাতিয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী কালকিনি উপজেলায় অবস্থিত সেনাপতির দিঘী ঐতিহাসিক এক নিদর্শন। ১৬৬৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর শায়েস্তা খাঁর বড় ছেলে বুজুর্গ উমেদ খাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি ইসলাম খাঁ প্রায় ১৫ জনশ্রুতি রয়েছে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে সুবাদার শায়েস্তা খাঁর নেতৃত্বে উমেদ খাঁ চট্টগ্রাম থেকে মগ জলদস্যুদের বিতাড়িত করে ঢাকায় আসার পথে কিছুদিন কালকিনি উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্যবর্তী আমড়াতলা ও খাতিয়াল এলাকায় অবস্থান করেছিলেন। সেই সময় এলাকার জনগণদের পানির অভাব দূর করার জন্য সেনাপতি ইসলাম খাঁর সেনাবাহিনী এই দীঘিটি খনন করেন। এই কারণে দীঘিটির নামকরণ করা হয় সেনাপতির দিঘী।একর জায়গা জুড়ে ৬০,৭০৩ বর্গমিটার আয়তনের এই দিঘীটি খনন করেন।এই দিঘীটি প্রায় ৩০০ বছর পুরনো।ঐতিহাসিক এই দিঘী নিয়ে বিভিন্ন লোককথা প্রচলিত আছে।বাঁশ-ঝাড়ে ঘেরা এই দিঘীর পানি নাকি কখনোই শুকায় না।স্থানীয় হিন্দুদের অনেকেই মনে করেন এই দিঘীর পানিতে রোগমুক্তির বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে।
শকুনি লেক
শকুনি লেক মাদারীপুর জেলার একটি পরিচয় বহনকারী ঐতিহাসিক নাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর শকুনি লেকের পরিবেশ সহজেই মনকে প্রশান্ত করে তোলে। কয়েকশ বছর পূর্বে জনৈক রাজা প্রজাদের পানির সংকট নিরসনের জন্য শকুনি লেক খনন করেন। যা বর্তমানে মাদারীপুরবাসীর কাছে বিনোদন কেন্দ্রের চাহিদা পূরণ করে চলেছে।বেলা গড়িয়ে যতই বিকাল হতে থাকে প্রায় ২০ একর আয়তনের এই লেকে ততই জনসমাগম বাড়তে থাকে। শহরের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে অবসর সময় কাটাতে ছুটে আসেন এই শকুনি লেকে। আর লেকের কাছের দোকানগুলোতে সুস্বাদু মিষ্টি পাওয়া যায়, যার সুখ্যাতি ছড়িয়ে আছে সারা বাংলাদেশে। এছাড়াও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (যেমন- ডিসি অফিস, পুলিশ স্টেশন ইত্যাদি) গড়ে তোলা হয়েছে শকুনি লেকের কাছে।
আউলিয়াপুর নীলকুঠি
___________________________________________
ঐতিহাসিক ফরায়েজী আন্দোলনের সাক্ষী আউলিয়াপুর নীলকুঠি মাদারীপুর অঞ্চলের মানুষের কাছে ডানলপ সাহেবের নীলকুঠি নামেও পরিচিত। আউলিয়াপুর নীলকুঠি যেন বর্তমানেও গরীব চাষীদের উপর ব্রিটিশ নীলকরদের শোষন এবং তৎকালীন সময়কে বহন করে চলেছে। আউলিয়াপুর নীলকুঠিরটি ছিলারচর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে অবস্থিত। মাদারীপুর জেলা শহর হতে এই নীলকুঠিরের দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। পীর-আউলিয়ার পদস্পর্শে ধন্য আউলিয়াপুরের খ্যাতিমান আউলিয়া হযরত শাহ সুফী খাজা ইউসুফ শাহ আহসানের দরগা শরীফের পাশেই রয়েছে নীলকুঠিটি। ১২ কক্ষ বিশিষ্ট আউলিয়াপুর নীলকুঠিরের মাঝামাঝি রয়েছে চুল্লি এবং প্রায় ৪০ ফুট উঁচু চিমনি। যদিও বর্তমানে প্রায় নিশ্চিহ্ন নীলকুঠিরের জমিও বিভিন্নভাবে বেহাত হয়ে গেছে।প্রায় দুইশত বছর আগে ডানলপ নামের এক ইংরেজ নীলকর ১২ একর জমির ওপর এই নীলকুঠিরটি স্থাপন করেন।