নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান।Places Of Interest In Narayanganj District.

0

পানাম নগর

পানাম নগর

পানাম নগর (Panam City) পৃথিবীর ১০০টি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি যা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এ অবস্থিত। পানাম বাংলার প্রাচীনতম শহর। এক সময় ধনী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বসবাস ছিল এখানে। ছিল মসলিনের জমজমাট ব্যবসা। প্রাচীন সেই নগরীর তেমন কিছু আর অবশিষ্ট নেই। এখন আছে শুধু ঘুরে দেখার মতো ঐতিহাসিক পুরনো বাড়িগুলো।  ঈসা খাঁ এর আমলের বাংলার রাজধানী পানাম নগর।বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর -প্রাচীন সোনারগাঁর এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয়। সোনারগাঁর ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিকভাবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। জানা যায়, ১৪০০ শতাব্দীতে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যেখানে পৃথিবীর নামি-দামি শিক্ষকরা পড়াতে আসতেন। এখানে একটি ভৃত্য বাজার ছিল বলে জানা যায়।পানাম নগরী এর দুই ধারে ঔপনিবেশিক আমলের মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে। পানাম নগরী চতুর্দিক থেকে পঙ্খীরাজ খাল দিয়ে ঘেরা। পঙ্খীরাজ খাল মেনিখালী নদ নামে মেঘনা নদীতে গিয়ে মিশেছে। পানাম নগরীর পূর্ব দিকে রয়েছে মেঘনা নদী আর পশ্চিম দিকে শীতলক্ষ্যা।এই নদী পথেই মসলিন রপ্তানি হত।




পানাম নগরীর প্রবেশ পথে আছে বিশাল গেট, সূর্যাস্থের সাথে সাথে এই গেট বন্ধ করা হত। বর্তমানেও কোন দর্শনার্থী সন্ধ্যার পর পানাম নগরীতে অবস্থান করতে পারেনা।নগরীর বুক চিরে চলে যাওয়া রাস্তার দুই পাশে রয়েছে প্রায় ৫২ টি ভবন। মূল রাস্তার উত্তর দিকে ৩১ টি এবং দক্ষিণ দিকে ২১ ভবন আছে। এই ভবন গুলো কোনটি এক তলা, কোনটি আবার দুই বা তিন তলা বিশিষ্ট।নগরীর অভ্যন্তরে আবাসিক ভবন ছাড়াও মসজিদ, গির্জা, মন্দির, মঠ, নাচঘর, চিত্রশালা, পান্থশালা, খাজাঞ্চিখানা, দরবার কক্ষ, পুরনো জাদুঘর, গোসলখানা ও গুপ্ত পথ রয়েছে। এছাড়া ৪০০ বছরের পুরনো টাকশাল বাড়ি ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৈরি নীলকুঠি এখানে দেখতে পাওয়া যায়।

জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক (Zinda Park) নারায়ণগঞ্জ জেলার দাউদপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জিন্দা পার্কে ২৫০ প্রজাতির দশ হাজারের বেশী গাছ, ৫ টি জলাধার ও অসংখ্য পাখি রয়েছে।  এছাড়া পার্কের ভেতরে আছে মার্কেট, একটি অতি সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর লাইব্রেরী, ক্যান্টিন ও মিনি চিড়িয়াখানা।এই পার্কটির বিশেষত্ব হল এটি এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। ১৯৮০ সালে ৫০০০ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা অগ্রপথিক পল্লী সমিতির দীর্ঘ ৩৫ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হচ্ছে এই জিন্দা পার্ক। ঢাকা থেকে জিন্দা পার্কের দূরত্ব মাত্র ৩৭ কিলোমিটার। পিকনিক কিংবা ডে আউট করতে চাইলে নিশ্চিন্তে বেছে নিতে পারেন জিন্দা পার্কটিকে। একদিকে যেমন সবুজে ঢাকা পার্কটি আপনার মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেবে অন্য দিকে পার্কটি যে কোন উটকো ঝামেলা থেকে সম্পূর্ন নিরাপদ।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি (Murapara Jamidar Palace) নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার অতি পরিচিত একটি স্থান। এটি ঢাকা থেকে ২৫ কি.মি. দূরে নরসিংদী রোডে অবস্থিত। জমিদার রামরতন ব্যানার্জী ১৮৮৯ সালে ৪০ হেক্টর জমির উপর নির্মাণ শুরু করেন মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটির। তিনি নাটোর স্টেট এর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিশাল এই জমিদার বাড়িতে প্রায় একশত’র উপরে কক্ষ রয়েছে, যার প্রায় সবগুলোতেই পাবেন কারুকার্যের ছোঁয়া। এই জমিদার বাড়ীতে রয়েছে কাছারিঘর, অতিথিশালা, নাচঘর, পুজা মণ্ডপ, বৈঠকখানা, ভাঁড়ার সহ বিভিন্নভাগে ভাগ করা অংশ।১৯০৯ সালে জগদিশ চন্দ্র ব্যানার্জী এই ভবনটি সম্পন্ন করেন এবং নিজেই একজন জমিদার হয়ে ওঠেন। জগদিশ চন্দ্র ব্যানার্জী একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন, কারণ তিনি দুই বার দিল্লীর কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত।হন। জমিদার বাড়ির মূল ভবনটিই মুরাপাড়া ডিগ্রী কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তার পাশে ১৯৯৫ সালে আরও একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মিত হয়। আরও অনেক জমিদার বাড়ী’র মত এটিও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে।

হাজীগঞ্জ দুর্গ

হাজীগঞ্জ দুর্গ

হাজীগঞ্জ দুর্গ  নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যার পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত।সপ্তদশ শতকের দিকে মুঘল সুবাদার ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকায় মুঘল রাজধানী স্থাপনের পর মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে নির্মিত তিনটি জল দুর্গ বা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্টগুলোর মধ্যে হাজীগঞ্জ অন্যতম। আর অপর দুই দুর্গের নাম সোনাকান্দা দুর্গ এবং ইদ্রাকপুর দুর্গ। চতুর্ভুজাকৃতির এই দুর্গের পঞ্চভুজি বেষ্টন-প্রাচীরে রয়েছে বন্দুক ঢুকিয়ে গুলি চালাবার উপযোগী ফোকর এবং চারকোণে গোলাকার বুরুজ। দুর্গের চতুর্ভুজাকৃতির অঙ্গনের এক কোণে রয়েছে ইটের তৈরি একটি সুউচ্চ চৌকা স্তম্ভ।কামান বসানোর উপযোগী উঁচু বেদীর অবস্থান দুর্গটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।ঢাকা থেকে সড়কপথে হাজীগঞ্জ দুর্গের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার।

 সোনারগাঁও জাদুঘর

সোনারগাঁও জাদুঘর

আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও লোকশিল্পকে ধরে রাখা ও সর্বজন স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্য ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরীর একটি পুরোনো বাড়িতে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (Bangladesh Folk Art and Craft Foundation) প্রতিষ্ঠা করেন। সোনারগাঁও ছিল বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র। এটি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা। এর অবস্থান ঢাকা থেকে ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। মধ্যযুগীয় নগরটির যথার্থ অবস্থান নির্দেশ করা কঠিন। বিক্ষিপ্ত নিদর্শনাদি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এটি পূর্বে মেঘনা, পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা, দক্ষিণে ধলেশ্বরী ও উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেষ্টিত একটি বিস্তৃত জনপদ ছিল।কররানী রাজবংশ এর প্রথম নবাব তাজ খান কররানী এর সময়কালে এটি ছিল সাম্রাজ্যের রাজধানী।প্রতিবছর শীতকালে এখানে মাসব্যাপী লোকশিল্প মেলা হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক সময় পহেলা বৈশাখের আগেও এই ধরনের লোকশিল্প মেলা আয়োজন করা হয়। গ্রামীণ আবহে পূর্ণ মেলায় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক জামদানীর হাট ছাড়াও গজা, মুড়ি মুড়কি ইত্যাদি বিভিন্ন গ্রামীণ অনুষঙ্গ পাওয়া যায়।

ফুলের গ্রাম সাবদি

ফুলের গ্রাম সাবদি

ফুলের গন্ধে ঘুম কেড়ে নেয়ার মতোই একটি গ্রাম সাবদি।যেদিকে দু’চোখ যায় কেবল ফুল আর ফুল। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই চোখ জুড়িয়ে আসতে চায়। ফুলের সুবাস যেন মন ভরিয়ে দেয়।এ গ্রামের আশপাশের সব জমি ও বাড়ির আঙ্গিনায় কাঠমালতি, গাঁদা, ডালিয়াসহ হরেক রকমের ফুলের বাগান।ফুলের সাম্রাজ্য সাবদি ছাড়াও দেখা মেলে দিঘলদী, সেলশারদী, মাধবপাশা, আইছতলাসহ সোনারগাঁও উপজেলার সম্ভুপুরা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে।

এসব গ্রামে কাঠমালতি, গাঁদা, বেলী ও জিপসি ফুলের বাগান করে শতাধিক মানুষের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাই সাবদী ও দিঘলদী গ্রামকে এখন সারা দেশে ফুলের গ্রাম নামে পরিচিত লাভ করে।নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবদি, দিঘলদী গ্রামের অবস্থান। গ্রামগুলোর পাশ ঘেঁষে বয়ে চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নদের পশ্চিম ধারে সারি সারি কাঠমালতির বাগান।

সোনাকান্দা দুর্গ

সোনাকান্দা দুর্গ

সোনাকান্দা দুর্গ (Sonakanda Fort) মুঘল আমলে নির্মিত একটি জল দুর্গ। এটি ১৬৫০ সালের দিকে তৎকালীন বাংলার সুবাদার মীর জুমলা কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এটি নারায়ণগঞ্জে জেলার বন্দর উপজেলায় শীতলক্ষা নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত। সপ্তদশ শতকে ঢাকা শহরকে বাহিরের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে যে তিনটি জল দুর্গ নির্মাণ করা হয়েছিল সোনাকান্দা দুর্গ তারমধ্যে অন্যতম।  বাংলার বার ভূঁইয়ার অন্যতম বীর ঈশা খাঁ তৎকালীন সময়ে এই দুর্গ ব্যবহার করতেন।চতুর্ভুজাকৃতির সোনাকান্দা দূর্গটি চারপাশে মজবুত উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা।প্রবেশদ্বারটি একটি আয়তাকার তোরণ কাঠামোর মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে।বিশাল আয়তনের আত্নরক্ষাকারী প্রাচীর ও পশ্চিম দিকে জলদস্যুর আক্রমণ থেকে রক্ষাকারী উঁচু মঞ্চ দুর্গের দুইটি উল্লেখযোগ্য অংশ। প্রাচীরের মধ্যে গোলা নিক্ষেপের জন্য রয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র। এছাড়া পশ্চিম দেওয়ালের মধ্যবর্তী স্থানে দুর্গের মূল বেদী রয়েছে। বর্তমানে এই দুর্গটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তরের অধীনে একটি সংরক্ষিত নিদর্শন।

কাইকারটেক হাট

কাইকারটেক হাট

শত বছর ধরে সপ্তাহের প্রতি রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাইকারটেক এলাকায় কাইকারটেক হাট (Kaikertek Hat) অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।সপ্তাহে প্রতি রবিবার এই হাটটি বসে বিধায় এই হাটকে রবিবারের হাটও বলা হয়ে থাকে।প্রায় ১০০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধারন করে আসছে এই কাইকারটেক হাট।স্থানীয়দের মতে ঐতিহাসিক এই কাইকারটেক নৌকার হাটটি প্রায় দুই থেকে আড়াইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। হাটের প্রাচীন নির্দশন ও পাতা ঝড়া কড়ই গাছ গুলো যেন হাটের বয়সকালের নিবর সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে। বছর জুড়ে হাট বসলেও বাংলা সনের আষাঢ় শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিণ এই চার মাসই হাটে নৌকার দেখা মিলে। বছরের মধ্যেই এই ৪ মাস কাইকারটেক হাটটি প্রাণ চাঞ্চল্য হয়ে উঠে।

সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি

সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি

সাতগ্রাম জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম নামক গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।ব্রিটিশ শাসনামলে এই জমিদার বাড়িটি তৈরি হলেও সঠিক সালটি জানা যায়নি। এছাড়াও কে এই জমিদার বাড়িটি তৈরি করেছেন। তারও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি.সাতগ্রামের জমিদারেরা খুবই অত্যাচারী ছিলেন। তারা প্রজাদের খাজনার বিনিময়ে যে জমি বরাদ্দ দিতেন সেগুলোর খাজনা পরিশোধ না করতে পারলে প্রজাদের উপর নির্মম অত্যাচার করা হত। আর তাই অত্যাচারী জমিদারের নানা কাহিনী জড়িয়ে আছে সাতগ্রাম জমিদার বাড়ির প্রতিটি গাঁথুনিতে।অসংখ্য সবুজ গাছ-গাছালীতে ঘেরা দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ির ভিতরে ঘাটসহ একটি পুকুর ও নান্দ্যনিক ফুলের বাগান রয়েছে। বর্তমানে প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে ঘেরা এই জমিদার বাড়িটি কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

মায়াদ্বীপ

মায়াদ্বীপ

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নে অবস্থিত মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠা ত্রিভুজ আকৃতির চরের নাম মায়াদ্বীপ (Maya Dwip)। সবুজে ঘেরা মায়াদ্বীপ আপনার মনকে এক অপার্থিব প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেবে। খোলা প্রান্তর, নদীর ঢেউয়ের সমান্তরালে বয়ে চলা বাতাস আর মাতাল করা একটি দুপুর সব মিলিয়ে এই চর যেন সত্যিই মায়ায় ঘেরা জাদুপুরী।সবুজ দ্বীপের ত্রিভুজের ঠিক মাথায় দাঁড়িয়ে আকাশ পানে চোখ বন্ধ করে দুই হাত প্রসারিত করে কয়েক মুহূর্ত এখানে কাটিয়ে ফেলার নামই জীবন! নদী থেকে উঠে আসা সতেজ-নির্মল বাতাস একটানা বইতে থাকে এখানে। সাঁই সাঁই বাতাসে উড়তে থাকা চুল জানিয়ে দেয় মুক্তির আনন্দ! ইট-কাঠের জঞ্জাল থেকে মুক্তির আনন্দ। জীবন এখানে হাসে গায়।

বাংলার তাজমহল

বাংলার তাজমহল

বিশ্বের প্রাচীন সপ্তাশ্চর্য আগ্রার তাজমহলের আদলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পেরাব গ্রামে নির্মিত হয়েছে অনুপমশৈলীর স্থাপত্যে বিশ্বের ২য় বাংলার তাজমহল। বাংলার তাজমহল (Banglar Tajmahal) আগ্রার তাজমহলের মডেলেই গড়া হয়েছে। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার।নারায়ণগঞ্জের শিল্পপতি চলচ্চিত্রকার আহসান উল্লাহ মনি এই তাজমহল তৈরী করেন। ২০০৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাজমহলের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। তাজমহলের প্রধান ভবন দামি স্বচ্ছ পাথরে মোড়ানো। বাংলার তাজমহলের অভ্যন্তরে আহসান উল্লাহ মনি এবং তার স্ত্রী রাজিয়ার কবরের স্থান সংরক্ষণ করা আছে। আগ্রার তাজমহলের মতই মূল ভবনের চার কোণে চারটি বড় মিনার রয়েছে। আর ভবনের সামনে রয়েছে পানির ফোয়ারা, ফুলের বাগান এবং দর্শনার্থীদের বসার স্থান।তাজমহলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী, জামদানি শাড়ি, মাটির গহনাসহ আরও অন্যান্য পণ্য সামগ্রী।বর্তমানে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভীড় করছেন তাজমহল দর্শনের জন্য।

গোয়ালদি মসজিদ

গোয়ালদি মসজিদ

গোয়ালদি মসজিদ (Goaldi Mosque) নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় নির্মিত একটি ঐতিহাসিক সুলতানি স্থাপনা। সোনারগাঁও পৌরসভার গোয়ালদি গ্রামে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহর রাজত্বকালে তৈরি গোয়ালদি মসজিদটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। আলাউদ্দিন হোসেন শাহর সময়ে শিল্প, শিক্ষা এবং সাহিত্যে এই বাংলার অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়। ইতিহাস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ১৫১৯ সালে মোল্লা হিজাবর আকবর খান ঐতিহ্যবাহী গোয়ালদি মসজিদ নির্মাণ করেন।প্রাক-মুগল যুগের ছোট্ট সুন্দর গোয়ালদি মসজিদটি এ এলাকার সর্বপ্রাচীন নিদর্শন। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যখন এটিকে ‘সংরক্ষিত’ ইমারত হিসেবে চিহ্নিত করে তখন এটি রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৭৫ সালে মসজিদটিকে পুনর্গঠন করা হয়।পূর্ব দিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে অলংকরণে সমৃদ্ধ তিনটি মিহরাব। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ততর এবং কালো পাথরে খোদাইকৃত ফুলেল ও আরব্য নকশায় চমৎকারভাবে অলংকৃত। তবে পার্শ্ববর্তী মিহরাব দুটিতে রয়েছে পোড়ামাটির সাবলীল ফুলেল ও জ্যামিতিক নকশা।




LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here