মুন্সিগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান।Places Of Interest In Munshiganj District.

0

ইদ্রাকপুর কেল্লা

ইদ্রাকপুর কেল্লা

ইদ্রাকপুর দুর্গ  মুন্সিগঞ্জ সদরে অবস্থিত। শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালের পশ্চিমপাড়ে এবং দেওভোগ গ্রামের পূর্বপ্রান্তে দুর্গটির অবস্থান। এই জল-দুর্গটি একসময় ইছামতী ও মেঘনা নদীর সংগমস্থলে সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্মিত হয়েছিল। তখন দুর্গের নির্মাণস্থলের নাম ছিল ইদ্রাকপুর। এ এলাকায় পরবর্তী সময়ে যে শহরটি গড়ে উঠে একসময় তার নামকরণ হয় মুন্সিগঞ্জ। শহরের উপকণ্ঠে এখনও ইদ্রাকপুর নামে একটি গ্রাম রয়েছে।মুগল রাজধানী শহর ঢাকা অভিমুখে জলপথে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের অগ্রগতি প্রতিহত করার লক্ষ্যে দুর্গটি নির্মিত হয়। এটি সম্ভবত বাংলার মুগল সুবাহদার মীরজুমলা কর্তৃক ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দের দিকে নির্মিত।ইট নির্মিত চতুর্ভুজাকৃতির এ দুর্গটি উত্তর দক্ষিণে প্রসারিত এবং এর দৈর্ঘ্য ৮৬.৮৭ মিটার ও প্রস্থ ৫৯.৬০ মিটার।ইদ্রাকপুর দুর্গের প্রধান ফটক উত্তরদিকে। ফটকের উপরের অংশে রয়েছে শীর্ষভাগ খিলানাকার ফোকর বিশিষ্ট ও মারলন শোভিত উঁচু আয়াতাকার বুরুজ। এ অংশটি ছিল প্রহরীদের কক্ষ।দুর্গের ড্রামের উপরিভাগে পরবর্তী সময়ে নির্মিত ভবন বর্তমানে জেলা প্রশাসকের আবাসস্থল। দুর্গটি এখন কারাগাররূপে ব্যবহূত।

রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি

রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি

মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখের নগর গ্রামে রায় বাহাদুর শ্রীনাথ রায়ের বাড়ির অবস্থান। নিমতলা থেকে যে রাস্তাটি উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে গেছে। সে রাস্তার উত্তর পাশে ইছামতি নদী ও শেখেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ। এ পাড় থেকে ওপাড়ে যেতে একটি সেতু রয়েছে ইছামতি নদীর ওপর।ব্রিটিশ শাসকরা মুন্সীগঞ্জের ধণাঢ্য ব্যক্তি শ্রীনাথ রায়কে ‘‘রাজা’’ ও ‘‘রায় বাহাদুর’’ উপাধী প্রদান করেছিলেন। তিনি দানশীল ব্যক্তি ছিলেন।প্রায় দু’শো বছর আগে নির্মিত এ বাড়িটি। বাড়িটির নকশা বর্গাকৃতির।বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের দুটি পুকুরে শানবাধানো ঘাট রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় রাজা শ্রীনাথ রায়ের সকল পরিবার সদস্যরা কলকাতা চলে যান।

বাবা আদম মসজিদ

বাবা আদম মসজিদ




___________________________________________

বাবা আদম মসজিদ বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ, যা ১৪৮৩ সালে নির্মিত। মালিক কাফুর কর্তৃক জামে মসজিদ হিসেবে মসজিদটি নির্মিত হয়।বাবা আদম শহীদ মসজিদটি বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দরগাবাড়ি গ্রামে অবস্থিত।বাবা আদম স্থানীয় অত্যাচারী হিন্দু রাজাদের যুদ্ধে শহীদ হোন। ১৪৪৯ খ্রিষ্টাব্দে বিক্রমপুরের শাসক মহান মালিক কাফুরশাহ বাবা আদমের নামে একটি চমৎকার মসজিদ নির্মাণ করেন।ভারতবর্ষ প্রত্নতত্ত্ব জরিপ বিভাগ ১৯০৯ সালে একবার এ মসজিদটি সংস্কার করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এরপর আর কোনো কাজ হয়নি। ১৯৯১ সালে লোহার সীমানা বেড়া দেয় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত অধিদপ্তর।

আড়িয়াল বিল

আড়িয়াল বিল

বর্ষাকালে অথৈ জলরাশি আর শীতকালে বিস্তীর্ণ সবুজ শস্যক্ষেতে পূর্ণ দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিলের নাম আড়িয়াল বিল (Arial Bil)। ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ১৩৬ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই বিলের অধিকাংশ অংশ মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে সাজানো আড়িয়াল বিল ঋতুভেদে নতুন নতুন বৈচিত্রের প্রকাশ ঘটে। হাজার বছর ধরে এই বিলের পরিবেশ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। অনুমান করা হয়, বহু প্রাচীন কালে এই জায়গায় গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলনস্থল ছিল। পরে দুই নদীরই প্রবাহ পরিবর্তনের ফলে এই স্থান শুষ্ক হয়ে বিলে পরিণত হয়েছে। ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলের দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার।

ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি

ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি

জমিদার যদুনাথ সাহা আনুমানিক ১৯০০ শতকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামে ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি (Vaggokul Palace) নির্মাণ করেন। যদুনাথ সাহা মূলত ব্যবসাহী ছিলেন এবং তিনি   বরিশাল থেকে লবণ, সুপারি, শাড়ি ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে মুর্শিদাবাদে রপ্তানি করতেন।মানিকগঞ্জের বালিয়াটি জমিদার বাড়ির সাথে দুই তলা ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ির বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ির দরজা ও জানালাগুলো একই আকারের ফলে বদ্ধ অবস্থায় দরজা-জানালার অনুমান করা বেশ কঠিন। বাড়ীর সমস্ত জায়গা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে মূল ভবন, আর তার মাঝখানে উঠোনের অবস্থান। বাড়ির একতলা থেকে দোতলায় চলাচলের জন্য আছে একটি কাঠের সিঁড়ি। যদুনাথ সাহা তাঁর ৫ ছেলেমেয়ের জন্য পৃথক পৃথক বাড়ী নির্মাণ করে দেন। বাড়িগুলো স্থানীয় মানুষের কাছে কোকিলপেয়ারি জমিদার বাড়ী, উকিল বাড়ী, জজ বাড়ী এবং ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি নামে পরিচিটি লাভ করে। এক বাড়ি হতে আরেক বাড়ির দূরত্ব ৪০ থেকে ৫০ গজ। তবে বান্দুরায় অবস্থিত ভাগ্যকুল জমিদার বাড়িটি বর্তমানে অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থায় রয়েছে।

মাওয়া ফেরি ঘাট

মাওয়া ফেরি ঘাট




___________________________________________

মাওয়া ফেরি ঘাট (Mawa Feri Ghat) পর্যটকদের জন্যে নদী ভ্রমণ এবং ইলিশ ভোজন এর জন্যে জনপ্রিয় একটি জায়গা। মাওয়া ফেরি ঘাটের পাড়ে রয়েছে বেশকিছু খাবার হোটেল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইলিশ খাওয়ার জন্য অনেকেই মাওয়া ঘাটে ছুটে আসেন। এখানকার মাছের বাজারে ইলিশ ছাড়াও অনেক বাহারি প্রজাতির তাজা মাছ পাওয়া যায়।ঢাকার কাছে অবস্থান হওয়ায় চট করে পদ্মা পাড়ের এই মাওয়া ফেরি ঘাট হতে দিনে গিয়ে দিনেই ঘুরে আসা যায়। রুপালী জলের ঝিকিমিকি দেখতে দেখতে পাড় ধরে দূরে হেটে যাওয়া কিংবা পদ্মা পাড়ের শান্ত সবুজ গ্রামের যান্ত্রিকতা ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশ আপনাকে আছন্ন করে রাখবে। নৌকায় ঘুরে দেখতে পারবেন পদ্মার বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য।আরও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে পদ্মার বুকে ১৫০ টাকা ভাড়ায় স্পীড বোটে এপার থেকে ওপারে যেতে পারেন।

মাওয়া রিসোর্ট

মাওয়া রিসোর্ট

রাজধানী ঢাকা শহর থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামে প্রকৃতির সংস্পর্শে মাওয়া রিসোর্ট (Mawa Resort) গড়ে তোলা হয়েছে।মাওয়া ১নং ফেরিঘাট থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে মাওয়া-ভাগ্যকূল রাস্তার পাশে পদ্মার পাড়ে নির্মিত মাওয়া রিসোর্ট প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here