থিম্পু
___________________________________________
পাহাড়ের উপর ভুটানের রাজধানী থিম্পু (Thimpu), যা সমদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭,৩৭৫ থেকে ৮,৬৮৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। সুন্দর শহর হিসেবে পরিচিত এই শহরের চারপাশের পাহাড়ি আঁকা বাঁকা রাস্তা ও ঠাণ্ডা হিমেল মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এক অদ্ভুত ভালো লাগা তৈরি করে পর্যটকদের মনে। আর রংবেরঙ্গের বাড়িগুলো দেখলে মনে হয় যেন কোন শিল্পীর তুলিতে যত্ন করে আঁকা কোন ছবি। আর তাই এমনই ছবির মতো শহর থিম্পু দেখার জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক পাড়ি জমায় এই শহরে।
সিমতোখা ডিজং : এখানে আছে রিগনে স্কুল অফ মোনাস্টিক স্টাডিস, ফ্রেশকো ও স্টেট কার্ভিং।
থিম্পু জং : ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই থিম্পু জং এ দেখা মিলবে দ্যা ন্যাশনাল এসেম্বলি, ভুটানের রাজার থ্রোন রুম ও সরকারি নানা ডিপার্টমেন্ট।
ন্যাশনাল তাকিন সংরক্ষিত চিড়িয়াখানা : ছোট একটি চিড়িয়াখানা, এখানে ভুটানের জাতীয় পশু তাকিন আছে। এন্ট্রি ফি লাগবে ৩০০ রুপি।
তাসিছ ডিজং বা থিম্পু ডিজং : এটাকে বলা হয় জেলা অফিস (district office)। এর মাঝে একটি বৌদ্ধ উপাসনালয় আছে।
পার্লামেন্ট হাউস : তাসিছ ডিজং বা থিম্পু ডিজং-এর পাশেই পার্লামেন্ট হাউজ। অবিকল ছবির মতো সুন্দর একটি ভবন। সবুজের মাঝে লালচে খয়েরি রঙে গড়া এক সুন্দর স্থাপত্য, যা সহজে নজর কাঁড়ে সবার।
এছাড়াও আছে থিম্পু ক্লক টাওয়ার, ফার্মারস মার্কেট, রাজপ্রাসাদ, ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং বিবিএস টাওয়ার এর মতো দেখার কিছু জায়গা।
বুদ্ধ দর্দেনমা স্ট্যাচু : পাহাড়ের উপর ৫১.৫ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট বিশাল এক স্ট্যাচু যা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি ও সোনার প্রলেপ দিয়ে আবৃত। বুদ্ধ দর্দেনমা (Buddha Dordenma) স্ট্যাচু শহরের যে কোন জায়গা থেকে দেখা যায়।
ন্যাশনাল মেমোরিয়াল কর্টেন : থিম্পুর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি বড় বৌদ্ধ উপসনা কেন্দ্র (national memorial chorten) এর এন্ট্রি ফি ৩০০ টাকা (স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখালে ১৫০ টাকা)। ভুটানের ৩য় রাজা জিগমে দরজির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৭৪ সালে এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। এখানে অনেক পেইন্টিং ও স্ট্যাচু আছে। রয়েছে হাজার হাজার কবুতর।
সিটি ভিউ পয়েন্ট : এখান থেকে থিম্পু শহরটা পুরো ঠিকমতো দেখা যায়। এছাড়াও সুন্দর, ছিমছাম গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ ভুটানের রাজা রানীর “কিংস প্যালেস” বা ডিচিনচোলিং প্যালেস চোখে পড়ে এখান থেকে।
পারো
সুখী মানুষের দেশ বলা হয় ভুটানকে ভুটান এর রাজধানী থিম্পু থেকে ৫১ কিলোমিটার দূরে নদীর কোল ঘেঁষে পারো উপাত্যকায় গড়ে উঠেছে “পারো” (Paro) নামের এক অপূর্ব সুন্দর শহর। এই সুন্দর শহরের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস ও নানা রকম গল্প। আর তাই ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য ভুটানের পারো হতে পারে একটি স্মৃতিময় আনন্দ ভ্রমণের উপলক্ষ্য।
___________________________________________
রিনপুং জং : রিনপুং শব্দের মানে “রত্নের স্তুপ”। এই রিনপুং জং হল পারো শহরের সবচেয়ে বড় দুর্গ। এখন মূলত এটি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থাকার জায়গা। এখান থেকে পারো শহর দেখতে খুব সুন্দর লাগে।
টা জং : রিনপুং জং এর পিছনে গড়ে উঠা টা জং মূলত একটি জাদুঘর। যদিও একসময় এটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এখানে ভুটানের নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিভিন্ন চিত্রকর্ম রয়েছে।
ন্যাশনাল মিউজিয়াম : ভুটানের এক সময়ের প্রাচীন ডাকটিকিট ও মুদ্রার দেখা মিলবে ন্যাশনাল মিউজিয়ামে। এই মিউজিয়ামটি এক সময় তাজিং দুর্গ ছিল।
ড্রুকগিয়াল জং : ন্যাশনাল মিউজিয়াম থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের সীমান্তে অবস্থিত ড্রুকগিয়াল জং একটি তাজিং দুর্গের ধ্বংসাবশেষ।
টাইগার্স নেস্ট বা টাইগার্স মনাস্ট্রি : পারো থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরে পারো ভ্যালির একটি খাঁড়া পাহাড়ের চূড়ার উপর পারো টাইগার্স নেস্ট মন্দিরটি অবস্থিত। টাইগার্স মনাষ্ট্রিতে হেঁটে যাওয়ার পথটা বেশ সুন্দর। এখানে একটি কফি শপ রয়েছে। স্থানীয় ভুটানিদের কাছে মন্দিরটি “তাক্তসাং/তাকসাং” নামেও পরিচিত। এছাড়া টাইগার্স নেস্টে ট্রেকিং করার সুযোগ রয়েছে।
কিচু মনাষ্ট্রি : কিচু মনাষ্ট্রির প্রধান রুমে গুরু পদ্মসম্ভবের একটি বিশাল মূর্তি স্থাপিত আছে। এছাড়া এখানে কমলালেবুর বাগান রয়েছে।
পারো চু : চু শব্দের অর্থ নদী। আর পারো চু হচ্ছে পারোর একমাত্র নদী। টলটলে স্বচ্ছ পানি এই নদীর বিশেষত্ব, যা দেখলে মনটা শান্ত হয়ে যায়।
আয়রন ব্রিজ : থিম্পুর মহাসড়কের পাশে পারো নদীর উপর অবস্থিত প্রাচীন একটি স্থাপনা এই আয়রন ব্রিজ।
চোমো লহরি : ভুটান ও তিব্বতের বাসিন্দাদের কাছে “চোমো লহরি” একটি পবিত্র পর্বত।