থাইল্যান্ডের দর্শনীয় স্থান সমূহ।Places of interest in Thailand

0

সাদুয়াক ফ্লোটিং মার্কেট:




___________________________________________

থাইল্যান্ডের ভাসমান বাজারে একদিন না ঘুরে আসলে আপনার থাইল্যান্ড ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে। ব্যাংকক ও অন্যান্য সব গুরুত্বপূর্ণ শহরের কাছাকাছি এরকম বেশ ক’টি ভাসমান বাজার রয়েছে। তবে এসবের মধ্যে দামনোয়েন সাদুয়াক ভাসমান বাজার সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। এই বাজারের দূরত্ব ব্যাংকক থেকে ৯০ কি.মি.। সদ্য তৈরি করা খাবার থেকে শুরু করে হস্তশিল্প‑ সব কিছুরই অঢেল আয়োজন রয়েছে এখানে। শুধু শাক-সবজি, ফলমূল, বা খাবার নয়, ঘর সাজানোর জন্য নানা রকমের ছবি, ফুলদানি, মূর্তি, নকল ফুলও পাওয়া যায় ভাসমান বাজারে। তবে শুধু পানিতেই নয়, তীরেও আছে স্যুভেনিয়র, পেইন্টিং, টি-শার্ট, ঘড়ি, গয়না, বাঁশি, কাঠের খেলনা ও নানা ধরনের পোশাকের দোকান।

পাতায়া সমুদ্র সৈকত:

পাতায়া সমুদ্র সৈকত মোটামুটি সবার কাছে পরিচিত। এই সৈকতের সাদা নরম বালু, সামনে বিস্তৃত নীল সমুদ্র, তাতে ভেসে বেড়ানো রঙ-বেরঙের বাহারি ছোট ছোট নৌকা আর পেছনে সবুজের চাদর বিছানো পাহাড়ের সারি আপনাকে দেবে এক অসাধারণ অনুভূতি। সাজানো গোছানো পাতায়ার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে সৌন্দর্য। ব্যাংকক থেকে পাতায়ার দূরত্ব ১৪৭ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে মনস্টার অ্যাকুরিয়াম। এটি পারিবারিক দিন কাটানোর জন্য অন্যতম আদর্শ স্থান। আপনি এখানে বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী যেমন হাঙ্গর ও গভীর সমুদ্রের অন্যান্য মাছের চলাচল দেখার পাশাপাশি তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

ফুকে:

এটি থাইল্যান্ডের বৃহত্তম দ্বীপ। ব্যাংকক থেকে ফুকের দূরত্ব প্রায় ৮৬০ কিলোমিটার। অসামান্য সমুদ্র সৈকতের জন্য ফুকের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। পৃথিবী বিখ্যাত সমুদ্র সৈকতগুলি সবই ফুকে দ্বীপে। ফুকের সাগর পাড়ের নীল জল, বন ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপসমূহ, সাদা বালুময় সৈকত, সমুদ্রের মাঝে পাহাড় জঙ্গল ভরা ছোট ছোট নির্জন দ্বীপ সৌন্দর্যের এক অনন্য বিস্ময়। সৈকতের পাশাপাশি ফুকের আরেকটি সৌন্দর্য হলো আন্দামান সাগরের ভেতরে চুনাপাথরের পাহাড়। বৈচিত্র্যময় এসব চুনাপাথরের পাহাড়ে অনেক সিনেমার শুটিং হয়েছে।




সিয়াম ওশান ওয়ার্ল্ড:

সাগরের অভ্যন্তরের সৌন্দর্য এবং সামুদ্রিক নানা প্রাণীর জীবন যাপন দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিয়াম ওশান ওয়ার্ল্ডে। কাঁচ ঘেরা বিশালাকার সব জলাধারে রয়েছে সামুদ্রিক নানা প্রাণী। রয়েছে হাঙ্গর, তিমিসহ নানান রকম সামুদ্রিক জলজ প্রাণী। কাঁচের তৈরি সুড়ঙ্গপথ দিয়ে যখন হাঁটবেন তখন মনে হবে আপনি সাগরের মাঝে রয়েছেন আর বিশাল বিশাল সব সামুদ্রিক প্রাণী আপনাকে ঘিরে ঘুরছে। সামুদ্রিক জীবন সম্পর্কে আপনার জ্ঞান বিস্তৃত করতে এক চমৎকার জায়গা এটি।

কো ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জ:

কো ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জ তাদের নান্দনিক বা শিল্প-রুচিসম্মত সৌন্দর্যের জন্য অতি পরিচিত এবং প্রতি বছর বিশাল সংখ্যক পর্যটক এখানে আসেন। বর্তমানে সামুদ্রিক বিনোদনমূলক কার্যক্রম যেমন স্নরকেলিং এবং স্ক্যুবা ডাইভিং-এর জন্য কো ফি-ফি হল বিশ্বের এক অন্যতম প্রসিদ্ধ গন্তব্যস্থল। পর্যটকদের জন্য প্রচুর চিত্ত-বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। এ ছাড়া এখানে ক্রুজ, ক্লিফ ডাইভিং, রক ক্ল্যাইম্বিং এবং মাছ ধরা বা ফিশিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

নর্দান হিল ট্রাইবস:

উত্তর থাইল্যান্ডের দিকে লুকিয়ে আছে থাইল্যান্ডের এমন এক জগত যা সাধারণ পর্যটকদের হাতের নাগালের একটু বাইরে। উত্তর থাইল্যান্ডের এই অঞ্চলটির নাম নর্দার্ন হিল ট্রাইবস। ট্র্যাকিং করে যে কেউ আসতে পারবে এখানে আর এখানকার যে কোনো গ্রামে কাটাতে পারবে ছুটির কয়েকটি স্মরণীয় দিন। যেহেতু অধিকাংশ আদিবাসীই অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল, তাই এখানে থাকার খরচও কম।




চিয়াং মাই:

চিয়াং মাই থাইল্যান্ডের প্রধান উত্তরাঞ্চলীয় শহর। এটি ব্যাংকক থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। থাইল্যান্ডের অন্যরকম জঙ্গল দেখতে গেলে যেতে হবে চিয়াং মাইয়ে। চিয়াং মাইকে বলা হয় থাইল্যান্ডের উত্তরের রাজধানী। সংস্কৃতি এবং অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণ এই শহর। সংস্কৃতি নিয়ে যাদের আগ্রহ তাদের প্রথম পছন্দ হতে পারে চিয়াং মাই। কেননা এখানে আছে পাঁচশ’রও বেশি মন্দির। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরকেও মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে চিয়াং মাই এর রাত্রিকালীন চিড়িয়াখানা। রয়েছে সুদৃশ্য জঙ্গলের ভেতরে হাইকিং ও খরস্রোতা নদীতে র‍্যাফটিং করার সুযোগ। থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ পয়েন্ট ডোই ইথানান রয়েছে চিয়াং মাইতে। পাহাড়ি উপজাতি, অসংখ্য জলপ্রপাত, থাই হাতির অভয়ারণ্য সব মিলিয়ে অসাধারণ এক জায়গা চিয়াং মাই। ব্যাংককের তুলনায় চিয়াং মাই রাতের বেলা কিছুটা নিরিবিলি। তবে তার মানে এই না যে, আপনাকে হোটেলে বসে থাকতে হবে। রয়েছে অসংখ্য বার ও শপিং করার জন্য রাতের বাজার। যেখানে আপনি পাবেন, নানান ধরনের ঐতিহ্যবাহী থাই জিনিসপত্র।

গ্র্যান্ড প্যালেস:




___________________________________________

ব্যাংককের গ্র্যান্ড প্যালেস তার সুন্দর স্থাপত্যের জন্য সুপরিচিত। এই প্যালেসটি পর্যটকদের জন্য এক অবশ্য-দর্শনমূলক গন্তব্যস্থল। প্রাসাদটি চারটি প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। এটি অনেক মঠ, দুর্যোগ এবং মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণকারী রাজা রামা ১-এর দ্বারা তৈরি হয়েছিল। গ্র্যান্ড প্যালেসের প্রাঙ্গণের মধ্যে রয়েছে ওয়াত ফ্রা শি রাট্টানা সাতসাদারাম বা ওয়াত কায়েও বা চ্যাপেল রয়্যাল বা এমারেল্ড বুদ্ধ। মন্দিরের প্রধান ভবনটি একটি পান্না-সবুজ বর্ণের বুদ্ধের মূর্তি দেখা যায়‑ যা দেখতে স্বর্গীয় মনে হয়। এ ছাড়া এখানে রাজ্যাভিষেকের পটমণ্ডপ, রাজকীয় অলংকরণ ও মুদ্রা যাদুঘরে মুদ্রা, রাজপোশাক, অলঙ্কারাদি, রাজ দরবারে ব্যবহৃত রাজকীয় অলংকরণ ইত্যাদি দেখা যায়।

ওয়াট ফো:

ব্যাংককের আরেকটি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হচ্ছে প্রাচীন বুদ্ধ মন্দির ওয়াট ফো। এখানে রয়েছে গৌতম বুদ্ধের বিশালাকার এক মূর্তি; যেটি প্রায় দেড়শ ফুট লম্বা এবং চল্লিশ ফুট উঁচু। আধশোয়া এ মূর্তিটি সম্পূর্ণ সোনার পাতে মোড়া যা দেখতে খুবই অসাধারণ। এ ছাড়া এর চোখ ও পা দুটি মুক্তো দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া, এখানে আরো দেখতে পাবেন অনেকগুলি প্যাগোডা, অসংখ্য বৌদ্ধমূর্তি, বোধিবৃক্ষ ঝর্ণা প্রভৃতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here